জমির
মধ্যে খরগোশের কিংবা ইঁদুরের গর্ত অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু তা যদি হয়
মাটির নিচে অনেক বড় রহস্যময় গুহার প্রবেশ পথ তা হলে তা অবাক লাগবেই। ইংল্যান্ডের শ্রপশায়ারের বেকবুরির কাছে ক্যানটন হলে রয়েছে এরকম কিছু
রহস্যময় গুহা। প্রচলিত আছে, আঠারো অথবা ঊনিশ শতকের আগে এই গুহা খনন করা হয়।
তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এটাকে নাইট টেম্পলারদের সাথে সম্পৃক্ত করে থাকেন। তাদের
মতে এটা করা হয়েছিল বারো শ শতাব্দীতে ক্যাথলিক মিলিটারিদের আদেশে।
জেরুজালেমে ছিল তাদের তীর্থস্থান। এই জেরুজালেমে যাওয়ার সময় ভয়ানক রাস্তা
থেকে তীর্থ যাত্রীদের রক্ষা করার জন্যে এই গুহা নির্মাণ করা হয়েছিল।
মধ্যযুগে এই আদেশ সমগ্র খ্রিস্টান সমাজে আরো জোরালো হয়ে উঠে। তবে চৌদ্দশ
শতাব্দীর শুরুর দিকে আস্তে আস্তে তা হারিয়ে যায়। কিন্তু এই আদেশ আকস্মিক
বন্ধ হয়ে যাবার ফলে খ্রিস্টানদের ওপর নিপীড়নের নানাবিধ কাল্পনিক ও পৌরাণিক
কাহিনি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ক্যানটন গুহা এর মধ্যে অন্যতম।
এম আই নয়ন : গুহা উদ্ভবের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। মনে করা হয় এটি ২০০ বছর অথবা অর্ধ
সহস্রাব্দেরেও পুরাতন হতে পারে, যখন টেম্পলারের আদেশ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
সম্ভাব্য এবং মোটামুটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা যা ধরা যেতে পারে, ঊনিশ শতকের
দিকে মূল্যবান পাথর খুঁজতে গিয়ে এই গুহার সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে জমির
মালিক এটাকে সুন্দর সুসজ্জিত একটি মনোরম প্রাকৃতিক গুহায় রূপান্তরিত করেন।
গুহাটিতে রয়েছে নব্য রোমান যুগের স্থাপত্যশিল্পের মতো করে তৈরি করা কিছু
রাস্তার সারি এবং বেলেপাথরের দেয়ালে খোদাই করা বেশ কিছু প্রকোষ্ঠ। এ ছাড়া
এর মধ্যে ধনুকের মতো বাঁকানো খোদাই করা ছাঁদ, পিলার, তার গায়ে নকশা, এবং
মোমবাতি রাখা যেতে পারে এমন ছোট ছোট গর্ত করাও রয়েছে।
অনেক আগে উদ্ভব হলেও এই ক্যানটন গুহা খবরে আসে অনেক পরে। কারণ অনেক বছর
পর এক ফটোগ্রাফার এই নিষিদ্ধ গুহায় প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিল। এটি লোকচক্ষুর
আড়ালে ছিল কারণ এই গুহাটি এক ব্যক্তির সম্পত্তির আওতায় ছিল। আর সেখানে সর্ব
সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। তবে সেই ফটোগ্রাফারের প্রতিবেদনটি রাতারাতি
বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল, নিউজ পোর্টালে ভিন্ন ভিন্ন কাল্পনিক ও চমকপ্রদ
শিরোনাম আসতে থাকে। ক্যানটন গুহা এই সময়ের আবিষ্কার নয় তবে এটা ৭০০ বছরের
পুরাতন নাইট টেম্পলারের গুহাও নয়।
ক্যানটন গুহা তার নিজস্ব মহিমার কারণেই সবার কাছে কৌতূহলের একটি ব্যাপার
হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটাকে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য কোনো অতিরঞ্জিত কল্পকাহিনির
প্রয়োজন নেই।