এটি সেচ্ছাসেবামুলক সংগঠন।আমদের কাজ সমাজের উন্নয়ন।।.এবং লেখা কিছু বৈজ্ঞানিক সমাজ গবেষণা।

Latest News:

Thursday, April 16, 2015

আশ্চর্যময় বিজ্ঞান টেলিপ্যাথি

প্যারাসাইকোলজি  মনোবিজ্ঞানের, এমন একটি শাখা, যা আপাত অব্যাখ্যাত মানসিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। প্যারাসাইকোলজি বিজ্ঞানের এমন এক শাখা যা অন্য সকল শাখার সমন্বয়ে কিছু তথ্য দেয়। প্যারাসাইকোলজিকে সাইকোফিনোমিনাও বলা হয়ে থাকে।
প্যারাসাইকোলজির অসংখ্য আলোচ্য বিষয়বস্তুর মাঝে উল্লেখ্যযোগ্য হলো :

  • টেলিপ্যাথি
  • অতি-প্রাকৃত ক্ষমতা ,
  • মৃত্যু-সন্ধিক্ষণের অভিজ্ঞতা,
  • হেলুসিনেশন,

টেলিপ্যাথি (টেলি যার অর্থ "দূরবর্তী" প্রাচীন গ্রিক τῆλε থেকে এবং πάθος, উদ্দীপনা বা -apatheia অর্থ "অনুভূতি, উপলব্ধি, আবেগ, দু: খ, অভিজ্ঞতা") [3] [4] এক ব্যক্তি থেকে তথ্য এর purported সংক্রমণ অন্য করা হয় আমাদের পরিচিত সংজ্ঞাবহ চ্যানেল বা শারীরিক কোনো যোগাযোগ না ব্যবহার না করে. শব্দ শাস্ত্রীয় পণ্ডিত ফ্রেডেরিক ডব্লু ম্যাইইয়ার্স, আধ্যাত্মিক রিসার্চ সোসাইটি [1] একটি প্রতিষ্ঠাতা, দ্বারা 1882 সালে সৃষ্টি করেন [2] এবং তার আগে অভিব্যক্তি চিন্তা-স্থানান্তরণ চেয়ে বেশি জনপ্রিয় রয়ে গেছে. [2] [5]
মন জানাজানি একটি বাস্তব ঘটনা যে কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই. মন জানাজানি সনাক্ত, বুঝতে, এবং ব্যবহার করতে চাইছেন অনেক গবেষণা সম্পন্ন করা হয়েছে, কিন্তু ভাল-নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় থেকে কোন অনুকৃতিযোগ্য ফলাফল বিদ্যমান. [6] [7] [8] [9]
টেলিপ্যাথি মন জানাজানিমূলক ক্ষমতা থাকার অনেক extraterrestrials, সুপারহিরোদের এবং সুপারভিলেন সঙ্গে আধুনিক কথাসাহিত্য এবং বিজ্ঞান কথাসাহিত্য মধ্যে একটি সাধারণ থিম.


টেলিপ্যাথির ইতিবৃত্তঃ শীতল যুদ্ধ শুরু হবার বহু আগে এমন কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরও পূর্বে অন্যদের মনো জগতে ভ্রমন করতে পারে এমন লোকদের নিয়ে কিছু পরীক্ষা চালিয়েছিল তিন মহারথী (দ্যা গ্রেট সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা এবং ব্রিটেন) এবং তার ফলাফলও ছিল চমকপ্রদ। সে সময় টেলিপ্যাথি মিলেটারি ইন্টিলিজেন্সে একটি বিশেষ আসন করে নিয়েছিল এবং এর ধারকদের বলা হত 'সাই এজেন্ট (Psi Agent)'। বর্তমানে টেলিপ্যাথিকে বিজ্ঞানীরা রিমোট সেন্সিং বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সে যায় হোক, এই এজেন্টরা তাদের মনটাকে ব্যবহার করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এবং বস্তু সম্পর্কে তথ্য দিতেন।
সময়টা ১৯৪০ সাল, এরকমই এক ক্ষমতাধর টেলিপ্যাথ উলফ ম্যাসিং  জোসেফ স্ট্যালিনের সুনজরে পড়লেন।

উলফ ম্যাসিং এর ঘটনাটাকেই মূলত টেলিপ্যাথির প্রতি সরকারী আকর্ষণের সূত্রপাত ধরা হয়।পশ্চিমা বিশ্বও টেলিপ্যাথি নিয়ে নাড়াচাড়াই পিছিয়ে ছিল না। ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে এস, জি, সোয়াল (১৮৮৯-১৯৭৯) নামের ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের এক গণিতের প্রফেসর ১ লক্ষ মানুষের মধ্য থেকে ১৬০ জনকে নিয়ে টেলিপ্যাথি টেস্ট করেন। একইভাবে প্যারাসাইকোলজিস্ট বাসিল সাকলেটন এবং রিটা এলিয়ট কিছু ফলাফল পেতে সক্ষম হন যেটাকে কোনভাবেই কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

কেন একজন অন্যের মনোজগতে অবাধ বিচরণ করতে পারছে, অন্যের চিন্তা চেতনাকে আচ্ছন্ন পারছে সেটা আজও অজানা। অনেক বিজ্ঞানীই মনে করেন যে, প্রত্যেকটি মানুষেরই একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত এই ক্ষমতাটা আছে আর এই ক্ষমতাটাকে কাজে লাগাবার জন্য দরকার সুতীক্ষ্ণ মনোসংযোগ।

টেলিপ্যাথি পরীক্ষার একটা খুবই সহজ প্যাটার্ন আছে। এই ক্ষেত্রে সাবজেক্ট এবং পরীক্ষক মুখোমুখি বসেন আর পরীক্ষকের সামনে থাকে একটা মনিটর যেখানে রেনডমলি ছবি অথবা সিম্বল জেনারেট হতে থাকে। পরীক্ষকের সামনে যে ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে টেলিপ্যাথকে (সাবজেক্ট) সেটা বলতে বা এঁকে দেখাতে হয়। টেলিপ্যাথিক সাবজেক্ট আসলে পরীক্ষকের মস্তিষ্কে যে ইমেজটা পড়ছে সেটা পড়তে পারে এবং তার উপর ভিত্তি করেই ছবি আঁকে। বছরের পর বছর এই পদ্ধতীতে খুবই আশ্চর্যজনক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।
মরফোজেনেটিক ফিল্ডঃ ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী রুপার্ট শেল্ডরেক এই মরফোজেনাটিক ফিল্ডের সূত্র আবিষ্কার করেন। এই সূত্রানুযায়ী প্রকৃতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু তথ্য সংরক্ষণ করে রাখে, যা পরবর্তী প্রয়োজনানুসারে অন্যদের কাছে পৌঁছে যায়। তাঁর বিখ্যাত উদাহরণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, ব্রিটিশ বংশীয় চিকাডি (Parus caeruleus) নামক পাখির দুধ চুরি কৌশল। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী কিছু পাখি যখন দুধের বোতলের এ্যালুমিনিয়ামের ঢাকনি খুলে দুধ চুরি করা শিখেছিল সেই কৌশলটি বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ঐ প্রজাতির পাখিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। শুধু তাই নয়, খুবই দ্রুত ইউরোপ মহাদেশীয় অন্যান্য পাখিরাও একই কৌশলে দুধ চুরি করা শুরু করে দেয়। এটা সম্ভব হয়েছিল মরফোজেনেটিক ফিল্ডের বদৌলতে। কারণ টেলিপ্যাথি বাঁধনহীন, এটা মানুষ এবং পশু উভয়ের সাথেই সমানভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
এটা ছাড়াও বিবিসি মানুষ এবং পশুর উপর পরীক্ষার কিছু নমুনা নিয়ে ডকুমেন্টারি করেছে। এরকমই একটা ডকুমেন্টারিতে কিছু কুকুরকে দেখানো হয়েছে যেখানে কুকুরগুলোর মালিকেরা ঐগুলোকে বাসায় রেখে বাইরে চলে যান (কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যে না)। একটা নির্দিষ্ট সময় পর মালিকেরা বাসায় তাদের কুকুরের কাছে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ডকুমেন্টারি টিম রেকর্ড করেছে যে, ঠিক যে মুহুর্তে মালিকেরা বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখনই কুকুর গুলো উঠে দরজার কাছে চলে গেছে এবং মালিকের জন্য অপেক্ষা করছে। অগণিতবার এই পরীক্ষাটা চালানো হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্তে উপণিত হয়েছে যে এটা কোন কো ইনসিডেন্স না। কারণ ফলাফল প্রতিবারই একই।
টেলিপ্যাথি ঠিক কিভাবে কাজ করে সেটা এখনো ধোঁয়াশা। সে যায় হোক, হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই পরীক্ষার মাধ্যমেই এর কার্যকারণ নির্ধারণ করা যাবে। কিন্তু তবুও কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, কেন এই ক্ষমতাটা বিদ্যমান, আর যদিওবা বিদ্যমান কেনই বা গুটি কয়েকজনই এর প্রয়োগ করতে পারে?! অন্যদের কমতিটা কোথায়?!

 

সত্যি কি টেলিপ্যাথি বলে কিছু আছে এ দুনিয়ায়?

আমাদের সবার জীবনের কোন না কোন ক্ষেত্রে টেলিপ্যাথি নেই এমনটা ভাবা যায়না. যেমন হয়তো কখনও অনেক অনেক মিস করছে অপু তানভীরভাইয়া তার টিয়াপাখিকে আর ঠিক সাথে সাথে তখুনি টিয়াপাখিটা কল করে বসলো বা চেয়ারম্যানভাইয়ার খুব খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো গমের আটার রুটি খেতে অমনি সেদিনই রাতে দেখলো মা গরম গরম রুটি আর গরুর মাংস ভুনা করেছেন. এসব আমরা খুব সহজেই কাকতালীয় ঘটনা বলে ফেলতে পারি কিন্তু আমরা জানিই না যে এটা আমাদের মস্তিষ্কের এক অতীন্দ্রিয় সংবেদনশীলতা যেখানে আমাদের অবাধ প্রবেশাধিকার নেই.টেলিপ্যাথি 3 রকমের হয়. যেমন -1. ফিজিক্যাল টেলিপ্যাথি,২. ইমোশনাল টেলিপ্যাথি এবং3. মেন্টাল টেলিপ্যাথি.
মেন্টাল টেলিপ্যাথিঃ কোন কথা-বার্তা, ইশারা ইঙ্গিত বা দেখা সাক্ষাৎ ছাড়াই দূরবর্তী দু'জন মানুষের যোগাযোগ করার ক্ষমতা. দূরত্ব এক রুম থেকে অন্য রুমের হতে পারে আবার পৃথিবীর একপ্রান্ত হতে অপর প্রান্তেও হতে পারে. অনেকেই মেন্টাল টেলিপ্যাথির অস্তিত্বে বিশ্বাস করবে না কিন্তু এরকম উদাহরণ দিতে পারবে যা মেন্টাল টেলিপ্যাথির সংগার সাথে মিলে যায়.
 
মেন্টাল টেলিপ্যাথিতে ইমোশন বা আবেগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে. একজন মা তার বাচ্চা ব্যথা পেলে টের পান, মা-বাবা মারা গেলে সন্তান টের পেয়ে যায়. বেশির ভাগ কেইসগুলা তে দেখা গেছে - মেন্টাল টেলিপ্যাথি শুধু মাত্র ঘনিস্ঠ বন্ধু কিংবা আত্মীয়ের মধ্যে কাজ করছে. ইশ আমি যদি টেলিপ্যাথি দিয়ে কোনো শত্রুর গলাটা চেপে ধরতে পারতাম. :(যাইহোক গবেষকরা অপরিচিত মানুষের মধ্যে পরীক্ষা করে যে ফলাফল পেয়েছেন তার থেকে অধিক বেশি শক্তিশালী ফলাফল ছিল আত্মীয় কিংবা রক্ত ​​সম্পর্কীয় ২ জন মানুষের মধ্যেকার টেলিপ্যাথিতে.

কিভাবে করে এই মেন্টাল টেলিপ্যাথি ??মেন্টাল টেলিপ্যাথি দু'রকমের. একটাতে দু'জন মানুষের দূরত্ব থাকে পৃথিবী ব্যাপি. কেউ কাউকে না দেখেই এবং কথা না বলেই তথ্য পাঠাবে. আরেকটাতে দু'জন মানুষ দু'জন কে দেখবে কিন্তু কোন কথা না বলে শুধু মাত্র যুক্তি সংগত চিন্তা করে তথ্য পাঠাবে. এভাবে যোগাযোগের যত বেশী চেষ্টা মানে প্র্যাকটিস করা হবে তত বেশি এই যোগাযোগ সহজ হয়ে যাবে. প্রথমেই এমন কাউকে নিতে হবে যাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা হয় এবং যে এই ব্যাপারে আগ্রহী. দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে মন খুলে অন্যজনের কাছে তথ্য পাঠানোর জন্য বসতে হবে. একজন কে সেন্ডার হতে হবে অন্যজন কে রিসিভার হতে হবে. প্রথমে ছোট ছোট ব্যাপার শেয়ার করতে হবে - যেমন কোন নাম কিংবা রং. পরে যত বেশী পারফেক্ট টেলিপ্যাথার হতে থাকবে তত তথ্য গুলো ও বড় হতে থাকবে.
টেলিপ্যাথি পরীক্ষার একটা খুবই সহজ প্যাটার্ন-এখানে সাবজেক্ট এবং পরীক্ষক মুখোমুখি বসতে হবে আর পরীক্ষকের সামনে থাকবে একটা মনিটর যেখানে ক্রমাগত ছবি বা সিম্বল জেনারেট হতে থাকবে. পরীক্ষকের সামনে যে ছবি দেখানো হবে, টেলিপ্যাথকে সেটা বলতে হবে বা এঁকে দেখাতে হয়. টেলিপ্যাথিক সাবজেক্ট আসলে পরীক্ষকের মস্তিষ্কে যে ইমেজটা পড়ছে সেটা পড়তে পারে এবং তার উপর ভিত্তি করেই ছবি আঁকে. বছরের পর বছর এই পদ্ধতিতে খুবই আশ্চর্যজনক ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে.স্যার রিচার্ড বার্টন, ডিউক ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী জে. বি. রাইন বিভিন্ন আধ্যাত্মিক ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করার জন্য অতীন্দ্রিয় উপলব্ধিকে ব্যবহার করেন. বিজ্ঞানীরা সাধারণত অতীন্দ্রিয় উপলব্ধিকে অগ্রাহ্য করেন, কারণ এক্ষেত্রে কোন সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য নেই. এছাড়া পরীক্ষামূলক পদ্ধতি না থাকায় এ পদ্ধতির কোন সুস্পষ্ট নির্ভরযোগ্যতা পাওয়া যায়না.
টেলিপ্যাথি নিয়ে আরও ধারনা ঃ
আমাদের অনেকেরই হয়তো এমন অভিজ্ঞতা আছে যে আমরা একজন মানুষকে মনে মনে ভাবছি আর তখনই সেই লোকটি টেলিফোন করেছে অথবা তার সাথে দেখা হয়েছে। এমন অনেক যমজ ভাই বোন পাবেন যারা একে অপরের মনকে পড়তে পারে। এমনকি যমজ এক ভাই যদি অনেক দূরে কোন বিপদের সম্মুখীন হয় সেক্ষেত্রে অন্য ভাই, কাছে না থাকেও সাথে সাথে তার ভাইয়ের বিপদের ব্যাপারে অনুধাবন করে পারে। অনেক এক্সপার্ট এই ক্ষমতাকে টেলিপ্যাথি বলে থাকে।  টেলিপ্যাথি হচ্ছে এমন একটি অভিজ্ঞতা যা কাজে লাগিয়ে আমারা অন্য মানুষের মনের ভাবনা বুঝতে পারি।   Socity forPsychical reserchএর প্রতিষ্ঠাতাWH Myears টেলিপ্যাথি শব্দটি প্রথম ব্যাবহার করেন। যদিও এই বিষয়ের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও শক্তভাবে তৈরি হয়নি কিন্তু অনেক বিজ্ঞানী এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছে। এখন দেখা যাক এই বিষয়টির কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কেমন হতে পারে?
বিজ্ঞানীরা দুইটি ভিন্ন তত্ত্বের মাধ্যমে টেলিপ্যাথিকে ব্যাখ্যার চেষ্টা করেন। প্রথমটি হল- Radio Wave Theory. এই থেওরি অনুযায়ী চিন্তার কারনে মানুষের মস্তিষ্ক থেকে এক ধরনের Radio wave বের হয়, যে wave অন্য কেউ গ্রহন করতে পারলে, সে প্রথম বাক্তির চিন্তা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। এই তত্ত্ব যদি সত্য হয় তাহলে মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ অনেক দূর থেকেও পরিমাপ করতে পারার কথা ছিল, কিন্তু কোন যন্ত্রের মাধ্যমেই মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ স্কাল থেকে কয়েক সেন্টিমিটার দুরেই আর ডিটেক্ট করা যায় না। তাই অনেক বিজ্ঞানীরা এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ।
টেলিপ্যাথি আর একটা তত্ত্ব হচ্ছে, Timeless/ Spaceless Psychic Field theory. এই তত্ত্ব অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের চিন্তা-ভাবনা গুলো একটি Psychic Field এ জমা থকে। যাদের টেলিপ্যাথিক ক্ষমতা আছে তারা ওই Psychic Field থেকে প্রয়োজন মত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু এ ধরনের কোন Psychic Field এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাছাড়াও মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে বিভিন্ন মানুষের চিন্তাকে পৃথক করতে পারে সে বিষয়েও কোন ব্যাখ্যা নেই।
উপড়ের দুটি তত্ত্ব ছাড়াও কোয়ান্টাম তত্ত্বের মাধ্যমেও টেলিপ্যাথির ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী দুইটি একে অপেরের সাথে সম্পৃক্ত মৌলিক কণিকাকে যদি অনেক দূরত্বেও স্থাপন করা হয় তাহলেও তাদের behavior একে অপরের উপর নির্ভর করে। একটি কণিকা অন্য কনিকার behavior তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী behave করে। তাই ধারণা করা হয় কণিকা দুটো নন-লোকাল কোন ডোমেইনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে, যা কিনা স্থান এবং সময়ের উরধে। ঠিক একইভাবে আমারা সবাই একে অপরের সাথে নন-লোকাল কোন ডোমেইনের মাধ্যমে যুক্ত। যে কারনে দুইজন মানুষকে যদি পৃথিবীর দুই প্রান্তেও নিয়ে যাওয়া হয় তাহলেও তারা একে অপরের মনের অবস্থা বুঝতে পারার কথা। একজন যদি একটা ছবি দেখে অন্যজন কোন প্রকার হিন্ট ছাড়াই ওই ছবি সম্পর্কে ধারণা করতে পারবে। University of Mexico এর neurophysiologist Jacob Grinberg-Zylberbaum এর একটি পরীক্ষা দুইজন মানুষ যে নন-লোকাল কোন ডোমেইনের মাধমে যুক্ত থাকে তার একটি প্রমান বহন করে। এই পরিক্ষায় দুইজন মানুষকে প্রথমে ৩০ মিনিট একসাথে মেডিটেশন করানো হয় তারপর তাদেরকে দুইটি ভিন্ন কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একজনকে একের পর এক কিছু লাইট ফ্ল্যাশ দেখানো হয় এবং তার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক একটিভিটি পরিমাপ করা হয়। একইসাথে অন্য রুম যে আছে তার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক একটিভিটি পরিমাপ করা হয় কিন্তু তাকে কোন লাইট ফ্ল্যাশ দেখান হয় না  এবং দেখা যায় যে তার মস্তিষ্কের একটিভিটি প্রতি ৪ বারে একবার তার পার্টনারের ব্রাইন একটিভিটির মত। অন্যদিকে যে মানুষদেরকে মেডিটেশনের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়নি তাদের এক জনের ব্রেইন একটিভিটী অন্যের সাথে কোন মিল নেই।

তবে যাই হোক মৌলিক কনিকার মত দুইজন মানুকেও একটা একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত করতে হয়, এক্ষেত্রে মেডিটেশন সম্পর্কযুক্ত করতে সাহায্য করে। কোন ধরনের টেলিপ্যাথিক যোগাযোগের জন্য দুইজন মানুষের মধ্যে সচেতন অভিপ্রায় এবং মতৈক্য প্রয়োজন। কিন্তু egotic অভিপ্রায়, শুধুমাত্র চিন্তা বা মনের ইচ্ছা এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত না। দুইজন যদি চেতনার এমন পর্যায়ে যেতে পারে যেখানে কোন ego থাকে না শুধুমাত্র তখনি তাদের মধ্যে টেলিপ্যাথিক যোগাযোগ সম্ভব

অনেকের ধারণা

টেলিপ্যাথিবিজ্ঞানের নামে প্রতারণা(এই তথ্য টি wikimedia থেকে নেওয়া হয়েছে)

 

এক বন্ধুকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে বসেছি। খাওয়া-ধাওয়া আর গল্প-সল্প সবই হচ্ছিল। হঠাৎ বিষম লাগলো আমার। রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গেলাম। হাঁচির দমকে টেবিল ফেলে দেবার দশা আর পাশে বসে দিব্যি হাসছে আমার প্রিয় বন্ধুটি। কৌতুহলে তাকাতেই- “তোমার কথা মনে করছে, কেউ” হাসতে হাসতে বললো। আমার এই বন্ধুটি যা বলেছে, ঠিক সেই কথাগুলো আমরা হরহামেশা শুনি; যখনই খেতে বসে কারো বিষম লাগে, তখনই। কনক্লুসন হলো- কেউ যদি কাউকে স্মরণ করে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি তখন খাবার টেবিলে থাকে তখনই বিষম লাগতে পারে। লাগবেই, এটা জোর দিয়ে বলা যায় না। কারণ এই ঘটনা নির্ভর করছে স্মরণকারী ও যাকে স্মরণ করা হচ্ছে এই ব্যক্তির সম্পর্কের মধ্যে। এই ছোট্ট ঘটনার তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো- এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করতে চাচ্ছি একজনের ‘ভাবনা’ আর একজনের কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করতে পারে। অর্থাৎ কোনো ক্ষেত্রে ‘ভাবনা’ বা চিন্তার সাহায্যে অপর কোনো ব্যক্তিকে প্রভাবিত করা যায়। অথবা নিজের ভাবনা তার মধ্যে সঞ্চারিত করা সম্ভব।
যেমন এই গল্পটির কথা ভাবুন- কোনো ধনীর দুলালীর সন্তান হলো, যা ঐ মেয়ের অভিভাবকদের অনাকাংক্ষিত। বাবা-মা প্ল্যান করে মেয়েকে বোঝালো সে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেছে। আসলে, সুস্থ সন্তানটিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হলো। কিছুদিন পর দেখা গেলো ঐ ধনীর দুলালী সব সময় কানের কাছে ‘মা’ ডাক শুনতে পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেখা গেল দিনের পর দিন ঐ ডাক স্পষ্ট ও জোরালো হয়ে উঠছে। স্বভাবতই এরপর গল্পে একজন সৌম্য, দাড়িওয়ালা মনোবিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে। মনোবিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে। মনোবিজ্ঞানী আবার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এবং লজিক ছাড়া এন্টিলজিকের ধারে-কাছেও যান না। মনোবিজ্ঞানী ঘোষণা করলেন-ঐ মেয়ের হারিয়ে যাওয়া সন্তান দূরে কোথাও থেকে টেলিপ্যাথি’র মাধ্যমে তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে এবং সফল হচ্ছে। বলার ভঙ্গিমার কারণে এই ধরনের গল্প প্রায়শ: বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে এবং পাঠকদের বিশাল অংশই ‘টেলিপ্যাথি’ নামক কারো কারো একটি বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যান।
বেশ, টেলিপ্যাথি কি? সংক্ষেপে, এ হলো কোনো রকম মাধ্যম ছাড়া দূরবর্তী কোনো স্থান থেকে চিন্তার ট্রান্সমিশন। আর ‘টেলিপ্যাথির মূল অর্থ হলো- চাপাবাজি ও প্রতারণা। টেলিপ্যাথিকে গুরুত্ব দেন মনোবিদদের একটি বিশেষ দল। এনারা নিজেদের বলেন, পরামনোবিদ (প্যারা সাইকোলজিষ্ট)। আসলে হলেন বিশুদ্ধ চাপাবাজ (অথবা বোকা)। এই পরামনোবিদ্যা (প্যারা সাইকোলজিষ্ট) অনুসারে টেলিপ্যাথি হলো এক প্রকার অতীন্দ্রিয় অনুভূতি, একস্ট্রা সেনসরি পারসেপশন বা সংক্ষেপে ইএপসি (ঊঝচ)। অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার মানে হলো প্রকৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করার মানুষের যে পাঁচ ইন্দ্রিয় আছে, তার বাইরের কোনো ব্যাপার- স্পাই থ্রিলারের স্পাইদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়। ব্রিটিশ জেমস বন্ড কিংবা আমাদের মাসুদ রানা, এদের সবারই ‘ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়’ খুব শার্প। নতুবা ঠ্যালা সামলানো খুবই কঠিন হবে যে!
ইএসপি বোঝানোর খুব সহজ ব্যাপার আছে। ধরুন, আপনি কোনো পরিসংখ্যান অফিসে চাকুরী করেন। আপনার কাজ হলো মানুষের বাসায় টেলিফোন করে ঐ বাসায় একটি বিশেষ সাবান ব্যবহৃত হয় কি না তা খোঁজ নেয়া। আপনি টেলিফোন ডাইরেক্টরী থেকে দশটি নম্বর বাছাই করলেন এবং আশ্চর্য হয়ে জানলেন ঐ দশটি বাসাতেই আপনার কাংক্ষিত সাবানটি ব্যবহার হচ্ছে। আপনি খুব অবাক হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন কিন্তু আমরা ইতিমধ্যেই বুঝতে পারবো আপনার ‘ইএসপি অসাধারণ’। পরামনোবিদদের ভাষায় চিন্তা হলো তরঙ্গ। যখনই কেউ চিন্তা করে তখন সে আসলে ‘তরঙ্গ’ তৈরি করে। মানুষ ঐ তরঙ্গের গ্রাহকযন্ত্র (রিসিভার) হিসেবে কাজ করতে সক্ষম। কাজেই, ফ্রিকুয়েন্সি মিললে একজনের ভাবনা আর একজনের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বলা বাহুল্য যে, এই ধরনের চিন্তা তরঙ্গের কোনো অস্তিত্ব আজ পর্যন্ত আবি®কৃত হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। আর মানুষের মাথা যে রিসিভার নয়, তার বড় প্রমাণ আপনি নিজে। কারণ, প্রতি মুহূর্তে আপনার চারপাশে বিস্তর তথ্য এদিক-সেদিক হচ্ছে, মাইক্রোওয়েভে বা বেতার তরঙ্গে। এ সবের কিছুই আপনার এন্টেনা ধরতে পারছে না।
ইএসপি ও টেলিপ্যাথিকে পুঁজি করে এই জগতে প্রচুর প্রতারকের আবির্ভাব ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবেও যদি না সমাজ থেকে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসকে ঝেটিয়ে দূর করা যায়। টেলিপ্যাথি সম্রাট নামে বিখ্যাত এই ধরনের একজন ধুরন্ধর প্রতারকের নাম ইউরি গেলার। দীর্ঘ সময় ধরে, প্রচুর বোকা মানুষকে মোহিত করে ভদ্রলোকে অনেক টাকা কামিয়েছেন। জারিজুরি ফাঁস হবার পর ভদ্রলোকের ইদানিং ব্যবসা মন্দা। তবে, তাকে নিয়ে গালগল্প ফাঁদবারতো লোকের অভাব নেই এদেশে। বিশেষ করে হাটখোলার সাপ্তাহিক ও সেগুনবাগিচার মাসিক পত্রিকাতো পাল্লা দিয়ে লিখেই চলছে।
আপনার আশপাশে যে সব টেলিপ্যাথিক ক্ষমতার অধিকারী পীর, ফকির ও সাধুবাজীরা আছেন তাদেরকে দুটো পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। প্রথমতঃ পকেট থেকে একটি টাকার নোট বের করে সেদিকে তাকিয়ে থাকুন। খেয়াল রাখবেন টেলিপ্যাথিক বাবা যেন সেটি দেখতে না পায়। এবার বাবাজীকে নোটের নম্বর জিজ্ঞেস করুন। অথবা বাবাজির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বাবাজীকে একটি কষে গালি দিন। তারপরে জিজ্ঞেস করুন আপনার ভাবনা বাবাজী ধরতে পেরেছে কি না।
পুনশ্চঃ যে বিষম খাওয়া নিয়ে এই লেখার শুরু সেই বিষম খাওয়ার মূল ব্যাপারটি, পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। খাদ্য বা পানি উদরে যাবার সময় অন্ননালীর পরিবর্তে যদি শ্বাসনালীতে ঢুকে পড়ে তাহলে শ্বাস রোধকারী একটা অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবর্তী ক্রিয়া হিসেবে হিক্কা, হাঁচির মাধ্যমে দুরবস্থার নিরসন হয়।
টেলিপ্যথির কিছু ছবিঃ





 আপনাদের পড়ার জণ্য বিভিন্ন পেজ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে,ভালো লাগলে কমেন্টে প্লিজ বলবেন।।
 

No comments:

Post a Comment

Copyright © 2014 nayan's foundation jessore All Right Reserved
^